
বাজারে চরম অস্থিরতা চলছে। গত আড়াই মাসে খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে ৩ দফা দেশে বছরে চাহিদা ১৫ লাখ টন আর আমদানি হয় ১০ লাখ টন প্রথমবারের মতো চলতি মাসে নতুন দাম নির্ধারণ করতে যাচ্ছে বিইআরসি
গ্রাহক পর্যায়ে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ওপর মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) ছাড় দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভোক্তাদের কাছে এ পণ্যেটির দাম সাশ্রয়ী মূল্যে রাখতেই এবিআরের এ উদ্যোগ। এনবিআরের সিদ্ধান্ত অনুসারে, এখন থেকে উৎপাদন বা সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট হবে ৭ শতাংশ। যা আগে ছিল ১৫ শতাংশ। এর ফলে এলপিজির চাহিদাও আরও বাড়বে। নিম্নআয়ের মানুষের কাছে এর ব্যবহার সহজলভ্য হবে। বাসাবাড়ি, দোকানপাট, গাড়ি- তিন ক্ষেত্রেই এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহার রয়েছে।
রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, রান্নার গ্যাস হিসেবে এখন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত এলপিজির খুচরা মূল্য ভ্যাট হ্রাসের পরে কমবে। তবে কত শতাংশ কমবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। গ্যাসের আমদানি মূল্যের ওপর নির্ভর করে চলতি মাসেই নতুন দাম নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিইআরসি।
সরকার দেশে প্রথমবারের মতো তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম নির্ধারণ করে দিতে যাচ্ছে। এ জন্য একটি ফর্মুলা চূড়ান্ত করে তা চলতি মার্চেই প্রকাশ করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এ উদ্যোগের ফলে এলপিজির দাম নিয়ে গ্রাহকরা যে বিড়ম্বনায় পড়তেন তা দূর হবে।
জানা যায়, বেশ কিছু সময় ধরে এলপি গ্যাসের বাজারে চরম অস্থিরতা চলছে। প্রতি কেজিতে বেড়ে যায় প্রায় ১৭ টাকা। গত আড়াই মাসে খুচরা বাজারে ৩ দফায় দাম বেড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে এলপিজির সাধারণ গ্রাহকরা।
রাজর্স্ব বোর্ড কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এনবিআরের ভ্যাট শাখা গত ৫ মার্চ বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবহিত করেছে এবং ভোক্তার ওপর ভ্যাটের চাপ কমানোর বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নতুন করে দাম নির্ধারণের অনুরোধ জানিয়েছে।
আমদানিকারকরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কারণে বেসরকারি কোম্পানিগুলো দেশীয় বাজারে দাম বাড়িয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। গত ছয় মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টনে ৩৫০ ডলার দাম বেড়েছে বলে দাবি তাদের।
জানা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে এলপিজি উৎপাদন হয়। মধ্যপ্রাচ্য থেকে এলপিজি থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে আনা হয়। পরে এসব দেশ থেকে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এনে থাকেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এলপিজি বাজারে চরম মন্দা শুরু হয়। রপ্তানিও কমে যায়। এতে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ে। মন্দার কারণে অনেকেই পস্ন্যান্ট বন্ধ করে দিয়েছে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও বন্ধ হয়ে যাওয়া পস্ন্যান্টগুলো চালু করা যায়নি। ফলে বিভিন্ন দেশে এলপিজির চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন তুলনামূলকভাবে বাড়েনি। তাই আমদানি ও খুচরা বাজারে এলপিজির দাম বেড়ে গেছে।
এলপিজি ব্যবসায়ী বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান বিন হাবিব জানান, গত ছয় মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজি প্রতি মেট্রিক টনে ৩৫০ ডলার বেড়েছে। দেশীয় বাজারেও চাহিদা ক্রমশঃ বাড়ছে। বিক্রয়মূল্যের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধির কারণে এলপিজির বাজারে প্রভাব পড়েছে। গরমকালে ইউরোপীয় দেশগুলোতে চাহিদা কমে যায়। তবে মার্চ মাসের পর বাজারে এলপিজির দাম আবার কমে যাবে। বাড়তি ভ্যাট আরোপের কারণে সিলিন্ডারের উৎপাদন খরচও বেড়ে যায়।’
এদিকে, দেশে গ্যাসের আবাসিক সংযোগ বন্ধ থাকায় এলপি গ্যাসের চাহিদা প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবাসিকে এলপিজি ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে চাহিদাও কয়েক গুণ বেড়েছে। শহর ছাড়াও গ্রামে ব্যাপক হারে এলপিজি ব্যবহার হচ্ছে।
বিইআরসির তথ্যমতে, দেশে দিন দিন এলপি গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। ২০০৮ সালে গ্রহস্থালি ও রান্নার কাজে এলপি গ্যাসের ব্যবহার ছিল মাথাপিছু শূন্য দশমিক ৩ কেজি, কিন্তু ২০২০ সালে তা বেড়ে ৫ দশমিক ৬৩ কেজিতে দাঁড়িয়েছে।
জানা গেছে, চাহিদা অনুযায়ী দেশে বছরে ১৫ লাখ টনের বেশি এলপিজি দরকার। তবে বর্তমানে এলপিজি আমদানি ও বিক্রির পরিমাণ ১০ লাখ টন। এর মধ্যে ২০ হাজার টন এলপিজি সরকারিভাবে বিক্রি হয়। অর্থাৎ বিপিসি মোট চাহিদার মাত্র ২ শতাংশ যোগান দেয়। বাকিটুকু বেসরকারিভাবে আমদানি করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী পাঁচ বছরে এর চাহিদা দ্বিগুণ হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এলপিজিতে সরকারের অংশগ্রহণ সামান্য হওয়ার কারণে বাজারে দামের তারতম্য রয়েছে। সেজন্য গ্রাহকরা পড়ছেন নানা বিড়ম্বনায়। সরকার এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দিলে গ্রাহকদের হয়রানি কমে আসবে বলে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।
উলেস্নখ্য, এলপিজির দাম নির্ধারণ নিয়ে আদালতের নির্দেশসহ নানামুখী চাপে রয়েছে বিইআরসি। এই চাপের মুখে গত ১৪ জানুয়ারি এলপিজির দাম নির্ধারণ করতে গণশুনানির আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। ওই শুনানিতে প্রতি মাসে এলপিজির দাম নির্ধারণের সুপারিশ করে এ-সংক্রান্ত কারিগরি কমিটি। শুনানিতে সরকারি কোম্পানির প্রতি বোতল এলপি গ্যাস ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ করার প্রস্তাব আসে। আর বেসরকারি কোম্পানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান দাম থেকে কমিয়ে এক হাজার ২৬৯ টাকা করার প্রস্তাব ওঠে।
এ প্রসঙ্গে বিইআরসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই দাম নির্ধারণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে একটা ফর্মুলায় এগোচ্ছে। যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। শিগগিরই তা প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি। সূত্র : যায়যায়দিন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন বড় বোন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন তিনি।
ঢাকা অফিস
সম্পাদক : মোঃ ইয়াসিন টিপু
নাহার প্লাজা , ঢাকা-১২১৬
+৮৮ ০১৮১৩১৯৮৮৮২ , +৮৮ ০১৬১৩১৯৮৮৮২
shwapnonews@gmail.com
পরিচালনা সম্পাদক : মিহিরমিজি