
সাভার বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সোহেল এর ইন্টারনেট ও সামাজিক সেবামূলক/ধর্মী প্রতিষ্ঠানে আকস্মিকভাবে হামলা করেন দুর্বৃত্তরা। হামলায় মারাত্মকভাবে জখম ও আহত হয়ে থানায় দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন সোহেল। কিন্তু, দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে অভিযুক্তদের বিচার না হওয়ায় হতাশা ও আশংকায় ভুগছেন তিনি। এমনকি, বর্তমানে অভিযোগকারীরা আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে এলাকায় বীরদর্পে বিচরণ করছেন।
মঙ্গলবার (২৪ মে) বিকেলে হামলার শিকার ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সোহেলের সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হয়।উক্ত ঘটনার বিষয়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সোহেলের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, সাভার পৌর এলাকার ৩ নং ওয়ার্ডে সাভার বাসস্ট্যান্ডের উৎসব প্লাজায় ২১৮ নম্বর দোকানটি আমার। এটা ইন্টারনেট ও ব্রডব্রান্ড ব্যবসার নিজস্ব অফিস। সরকারি অনুমোদন, ট্রেড লাইসেন্স ও সকল নিয়মকানুন মেনেই আমি আবার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছি। এই প্রতিষ্ঠানের আমি নিজেই মালিক। এখানে আমার কোন অংশীদার নাই। দীর্ঘ সময় ধরে সুনামের সাথে কাস্টমার কে সেবা দিয়ে এই প্রতিষ্ঠান টি তৈরি করেছি।
পাশাপাশি, আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাথে জড়িত ছিলাম। সেই ২০০৪ সালে আওয়ামিলীগ ততকালীন বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় ৩ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব কাধে নিয়ে আজ দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে আছি। তখন রাজপথে স্লোগান শুধু মাত্র সিনিয়র নেতা আর আমি ধরতাম, তখন সচরাচর তেমন কেউ স্লোগান দিতে পারতো না। সর্বশেষ অবিভক্ত ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলাম। সম্প্রতি, আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগে ঢাকা জেলার এই ইউনিট বিভক্ত হওয়ায় অবসর পেয়েছি, উপজেলা আওয়ামী লীগে কাজ করছি। আওয়ামীলীগ আমার প্রাণের সংগঠন। যেটা আমার রক্তের রনজিতে মিশে আছে যা আমি আমার বাবার কাছে থেকে প্রথম অনুপ্রেরণা পেয়েছি, বাবা যখন বঙ্গবন্ধুর যে কোন কথা বা ইতিহাস বলতেন শেখসাব শব্দের মাধ্যমে শুরু করতেন আর এভাবে ঘরে থেকেই শুনে বড় হয়েছি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছি। যতটা সম্ভব আমি সততার সঙ্গে মানুষের উপকার করার চেস্টা করি এবং করে যাচ্ছি, এ শিক্ষা গুলো আমার পরিবারের যা আমার অর্জন।
দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনার বিষয়ে সোহেল বিস্তারিতভাবে বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাসের ৭ তারিখে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে ব্যবসায়ীক কাজকর্ম করছি। এই সময় আমার অফিসে একজন গ্রাহকের সাথে বসে আমি ব্যবসা সংক্রান্ত আলোচনা করছি। এরিমধ্যে, ঠিক দুপুরে ১০/১৫ জনের একদল দুর্বৃত্ত এসে আমার অফিসে ভাঙচুর ও আকস্মিকভাবে আমার উপর হামলা করে। আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা আমাকে প্রচন্ড রকম আঘাত করে মারাত্মক আহত করে দেন। তারা আমাকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠি, হকিস্টিক ও লোহার রড দিয়ে প্রচন্ডভাবে আঘাত করেন।
পাশাপাশি, আমার অফিস স্টাফ জুয়েল গাজীকে মেরে আহত করেন। এভাবে তারা ৪/৫ মিনিট আমাকে মারধর করেন। তারা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আমার উপরে হামলা চালান। তারমধ্যে, ৪/৫ জন মূল হামলাকারী আমাকে আহত অবস্থায় চ্যাংদোলা করে অপহরণ করার চেষ্টা করেন। তারা যখন আমাকে মার্কেটের মাঝামাঝি সিঁড়ি বরাবর নিয়ে এসেছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে মূল হামলাকারী নিজাম উদ্দিন টিপু (যুগ্ম সাঃ সম্পাদক, সাভার কলেজ ছাত্রলীগ) এসে না জানার ভান করে বিষয়টি মীমাংসা করার প্রস্তাব দেন।
তখন টিপু আমাকে বলে ভাই, ‘এই মার্কেটে আমার লোক আছে’। ‘ওনাকে একটা ইন্টারনেট লাইন দেওয়ার জন্য আমার লোকজন কে পাঠিয়েছি’ আপনি এসব জানতেন না’। আমি বললাম, ‘তুমি এজন্য আমাকে একটা ফোন করতা অথবা তোমার ওই লোককে ফোন করে বলতা আমাকে দিতে’। ‘তখন সে আমাকে বলে, ‘আপনি আমাকে ফোন করতেন’। ‘তখন আমি তার এই কথা শুনে অবাক হয়ে তাকে বলি, ‘আমি তোমাকে ফোন করবো’! এখন খুববেশি দুঃখ লাগে যে, রাজনীতি করতে গিয়ে অনেক সময় অনেক হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। তখন কিন্তু এত কষ্ট পাইনি। আর এখন নিজ দলের কর্মীদের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়ে অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছি। যেটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিনা।
তিনি বলেন, মনে মনে ভাবছি আল্লাহ্পাক রাব্বুল আলামিন হয়তোবা, এসব আমার কপালে লিখে রেখেছেন। তবে, আমি একথা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বড় গলায় বলতে পারি। সাভার পৌর এলাকায় আমার বিরুদ্ধে এমন কোনো প্রমাণ নাই যে, আমি কোনো অনৈতিক কাজে জড়িত ছিলাম বা আছি, কারো থেকে অন্যায় ভাবে জোরজবস্তি করে কোনো কিছু আদায় করেছি। আমি রাজনীতি করেছি নিয়মের মধ্যে থেকে নীতি নিয়ে বঙ্গবন্ধু, দল ও শেখ হাসিনাকে সম্মান করে। এমনকি, এ ঘটনায় আমার দলের ২জন বড়ভাই আমাকে ফোন করে বলেছিলেন। ‘তুই আয় একসাথে বসি আমরা’। ‘এ বিষয়ে সমাধান করে দেব’একটা ভুল বুঝাবুঝি ‘একসাথে রাজনীতি করেছি আমরা মাঠেঘাটে, বিষয়টি মীমাংসা করে দেই’। কিন্তু, আমি তাদের এই প্রস্তাবে রাজি হইনি এবং তাদের সাথে বসিনি।
আমার ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা চলাকালীন সময়ে আমাকে উদ্ধার করতে তখন মার্কেটের কেউ এগিয়ে আসেননি। সবাই শুধু তাকিয়ে রয়েছেন, তখন মার্কেট কমিটির নেতারা এবং কিছু দোকান মালিক মাদবরা হাসাহাসি করেছেন। তবে, আমি ইচ্ছা করলে ওই হামলাকারী টিপুসহ তাদেরকে আটক করতে পারতাম। কারন, মার্কেটে আমাদের ৩টা গেট রয়েছে। এই গেটের পাশে আমার আত্মীয়-স্বজন ও আপন বড় ভাইদের দোকান রয়েছে। পারিবারিকভাবে আমার অনেক লোকজন ছিলো। আমি যদি তাদেরকে বলতাম কয়েক মিনিটের মধ্যে তাদেরকে আটক করতে পারতাম। মূলতঃ আমি এই আকস্মিক হামলার ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়েছি। আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে, নিজ দলের কর্মীদের হাতে আমি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হবো। তবে, আমি পরবর্তীতে এটা নিয়ে ভেবেছি এবং ভেবে আশ্বস্ত হয়েছি। এটা আমার প্রতি আল্লাহর নিদর্শন ছিল। ঘটনা ঘটার পরপরই পুলিশ আসেন। তারা সরেজমিনে কিছু তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে যান।
তাদের এই হামলায় আমি মারাত্মকভাবে জখম হই। বিশেষ করে আমার ডান চোখে প্রচন্ড রকম ক্ষত হয়। আমি সাভার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি। আমার চিকিৎসার সকল ব্যবস্থাপত্র ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা রয়েছে। এমনকি এই হামলার সম্পূর্ণ ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। আপনি চাইলেই এসব দেখতে পারেন। লাল গেঞ্জি ও ক্যাপ পরা যে ছেলেটি সেই হলো টিপু। ভিডিও ফুটেজে তার ছবি রয়েছে। বর্তমানে সাভার পৌর এলাকায় তারা ছাত্রলীগের নাম করে বিশাল অরাজকতা করছেন। এমনকি রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন। তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই এরকম হামলা-ভাঙচুর শুরু করেন। বর্তমানে সাভার উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রলীগের যে কমিটি আছে তার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে কমপক্ষে ৩ বছর আগে যার কোন প্রকার বৈধ লিখিত মেয়াদ নাই। এ সকল কমিটির বেশিরভাগ নেতারা বিবাহিত ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়েই ব্যাস্ত।
তিনি আরও বলেন, তাদেরকে এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাভার পৌর এলাকার সিটি সেন্টার মালিক সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এবং আমি যে মার্কেটে ব্যবসা করি এই মার্কেটের একাংশের মালিক। এমনকি তাঁর আরেকটি বড় পরিচয় হচ্ছে, সাভার থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ওবায়দুর রহমান অভি। আমার ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার বিষয়ে সাভার এলাকায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সবাই জানেন। কিন্তু, কেউ কিছু করতে পারছেন না বা আগ্রহী নয় কারণ, হচ্ছে টাকা-পয়সা দিয়ে সবাইকে হাত করে নিয়েছেন অভি।
এর কদিন আগে কিছু নীতিগত ও যৌক্তিক বিষয়ে অভির সাথে আমার বাকবিতণ্ডা হয়। এর কিছুদিন পর তিনি আমাকে ফোনে হুমকি দিয়ে বলেন দেখ, যার উপরে আমার মন ক্ষুন্ন হয় তার গায়ে কিন্তু জ্বর উঠে যায়, বমি করে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে; সুতরাং আমার মন খারাপ হয় এমন কাজ করিস না। এরপর কয়েকদিন পরে হঠাৎ করে ফোন করে বলে
‘তুই কাজটা ভালো করলি নারে’। ‘তুই অনেক বেয়াদবি করলি আমার সাথে’ ‘তুই অনেক বড়ো ভুল করলিরে’। ‘তোকে এর খেসারত দিতে হবে’। আমার এসব রেকর্ড রয়েছে। এই কথার ঠিক ৪ দিনের মাথায় তিনি তার লালন-পালনকারী লোকদের কে দিয়ে আমার উপর হামলা করান। আর এমন লোকদেরকে দিয়ে তিনি আমার উপর হামলা করান। আমি চাইলেই তাদের প্রতি কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছিনা। কারন, তারা সবাই আমার দলের জুনিয়র ছোট ভাই।
আর, এই কারনেই শেষ পর্যন্ত আমাদের সাভার থানায় ঘটনার ২ দিন পর মামলা করতে বাধ্য হই আমি। আবার এমন হয়েছে মামলা পরিচালনা করার কোন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়নি সময়মতো। পুলিশ মাঝেমধ্যে এসে আমাকে বলেন, আসামিদের বাড়িঘর চিনিয়ে দেন। আমরাতো তাদেরকে চিনি না, এখানে নতুন তাহলে, কিভাবে আসামি ধরবো। একজন পুলিশ কর্মকর্তা যদি একথা বলেন। তাহলে, আমরা কোথায় যাবো। আমি আশাকরি আপনাদের মাধ্যমে আমার এই ঘটনা জনগণ জানুক এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী “জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা” আপার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, কড়জোরে মিনতি করি আপনার কাছে এখানই সময় এদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসেন। এমনকি এই কুলাঙ্গারদের একটা বিচার হোক। কারণ, তারা আওয়ামীলীগের নাম বিক্রি করে অন্যায় কাজকর্ম করে দলকে কলঙ্কিত করছেন। আমি যতটুকু শুনেছি, তারা আগাম জামিন নিয়ে এলাকায় তাদের আচরণ দেখে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তারা যেনো আবারও হামলা শুরু করে দিবে।
প্রায়ই সময় আমার বাসার আশেপাশে ও অফিসের মানে মার্কেটের সামনে দিয়ে বাইক, গাড়িতে মহড়া দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমি ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছি এবং জীবনের হুমকি নিয়ে অনিরাপদ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাহীনতায় দিনযাপন করছি। এরপর তারা আমার চাচাতো ছোট ভাই জাহিদ কে ডেকে নিয়ে তাদের অফিসে বিভিন্ন ভাবে জেরা করে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে মামলা দিয়ে কি হবে কিছু করতে পারবি। মামলার জামিন তো আমাদের রেডি থাকে তারপর তোরা কই যাবি। তবে, আমি আপনাদের মিডিয়ার প্রতি শুধু একটি আহ্বান করব। আপনারা আমার এই পুরো বক্তব্যটি আপনাদের পত্রিকায় প্রকাশ করে মানুষকে জানিয়ে দেন। কেউ যেন ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সুনাম নষ্ট না করতে পারেন। পাশাপাশি, উপরোক্ত ঘটনার একজন ভূক্তভোগী হিসেবে আমি ওই হামলাকারীদের বিচার চাই। আর কখনো কোনদিন যেনো বাংলার মাটিতে আওয়ামীলীগের এক কর্মীর হাতে আরেক কর্মী হামলার শিকার হতে না হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন বড় বোন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন তিনি।
ঢাকা অফিস
সম্পাদক : মোঃ ইয়াসিন টিপু
নাহার প্লাজা , ঢাকা-১২১৬
+৮৮ ০১৮১৩১৯৮৮৮২ , +৮৮ ০১৬১৩১৯৮৮৮২
shwapnonews@gmail.com
পরিচালনা সম্পাদক : মিহিরমিজি