
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের মধ্যনগর মধ্যবাজারে শুক্রবার রাতে একটি চৌকির ওপর একটি নবজাতক ছেলে সন্তান জন্ম দেন মানসিকভারসামীহীন ও পরিচয়হীন এক নারী (৩৫)। দেখভালো করার কেউ না থাকায় খবর পেয়ে নব জাতক ওই শিশুটি ও তাঁর মায়ের পাশে দাঁড়ান মধ্যনগর থানার ওসি মো.জাহিদুল হক। আর এই ওসির তৎপরতায় নবজাতক শিশুটি ও মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী পেল চিকিৎসা সেবা। শনিবার সকালে নবজাতক শিশুটি ওতার মাকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় ও আশপাশের মানুষজন নবজাতক শিশুটি ও তাঁর মাকে একনজর দেখার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখার জন্য ছুটে আসছেন।
মধ্যনগর থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,মানসিক ভারসাম্যহীন গর্ভবতী ওই নারী মাস খানেক ধরে উপজেলার মধ্যনগর বাজারের বিভিন্ন স্থানে এলোমেলোভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে ঠিকানা বলতে পারতেন না। খুশি হয়ে কেউ কিছু দিলে খেতেন না হলে না খেয়েই থাকতেন। শুক্রবার রাতে মধ্যনগর বাজারের পাহারারা কাজে নিয়োজিত ছিলেন নৈশপ্রহরী প্রাণেশ সরকার (৪৫ )। তিনি রাত ১১টার দিকে নবজাতক শিশুটির কান্না ও শিশুটির মায়ের ঘুংরানির শব্দ শুনতে পেয়ে তিনি ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে মধ্যনগর থানার ওসির কাছে ছুটে গিয়ে তাঁকে বিষয়টি অবগত করেন। দেখভালো করার কেউ না থাকায় খবর পেয়ে ওসি জাহিদুল হক সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছুটে আসেন। তিনি মোটারসাইকেলে একজন কনস্টেবলকে পাঠিয়ে মধ্যনগর বাজার এলাকায় থাকা মধ্যনগর ১০শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের নার্স ঘটনাস্থলে আনার ব্যবস্থা করেন। নার্স সেখানে এসে নবজাতক শিশুটি ও তাঁর মায়ের পরিচর্ যা শুরু করেন। পরে ওই দুজনকে মধ্যনগর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে সাময়িক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। শনিবার সকাল আটটার দিকে ওই দুজনকে মধ্যনগর থানা পুলিশের সহায়তায় পাশের ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।মা ও শিশুটি হাসপাতালের একটি কক্ষে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মধ্যনগর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলার আমানীপুর গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন ,নবজাতক শিশুটি ও মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর বিপদে পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা সেবা করার ব্যবস্থা করায় মধ্যনগর থানার ওসি স্যার মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
মধ্যনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.জাহিদুল হক বলেন, নবজাতক ওই শিশুটি ও তাঁর মাকে দেখভালো করার কেউ না থাকায় আমি একজন মানুষ হিসেবে আমার কর্তব্যপালন করেছি মাত্র। আমি ঘটনাটি মধ্যনগরের ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি।নবজাতক শিশুটি ও তাঁর মাকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার ব্যবস্থা করেছি। ওই শিশুটি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তত্বাবধানে রয়েছে।
ধর্মপাশা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমি আমার স্টাফ নিয়ে নবজাতক শিশু ও মানসিকভারসাম্যহীন ওই নারীকে হাসপাতালে গিয়ে দেখে এসেছি। চিকিৎসক ও নার্সরা আন্তকিরভাবে শিশুটি ও তার মাকে চিকিৎসা সেবা দিচেছন। আমি দুইদিনের জন্য প্রশিক্ষণে এলাকার বাইরে যাচ্ছি। সেখান থেকে ফেরার পর নবজাতক শিশুটি ও তাঁর মায়ের জন্য সরকারি নির্দেশনা মতো যা যা করার প্রয়োজন তার সবকিছুই করব। ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার তানভীর হাসান বলেন, নবজাতক শিশুটিকে রক্ষণাবেক্ষণ ও শিশুটিকে খাওয়ানোর জন্য দুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নবজাতক শিশু ও তাঁর মা দুজনই ভালো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। মা ও নবজাতক দুজনই ভালো আছে। চিকিৎসা শেষে নবজাতক ওই শিশুটি ও তাঁর মাকে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হবে।
মধ্যনগরের ইউএনও নাহিদ হাসান খান বলেন,নবজাতক শিশুটি ও ভারসাম্যহীন নারীর শারিরীক অবস্থার খোঁজ খবর নিচিছ। নবজাতক ও তার মায়ের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিধি মোতাবেক যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন বড় বোন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন তিনি।
ঢাকা অফিস
সম্পাদক : মোঃ ইয়াসিন টিপু
নাহার প্লাজা , ঢাকা-১২১৬
+৮৮ ০১৮১৩১৯৮৮৮২ , +৮৮ ০১৬১৩১৯৮৮৮২
shwapnonews@gmail.com
পরিচালনা সম্পাদক : মিহিরমিজি