
রাজধানীতে সজিব নামের এক যুবককে পাঁচ টুকরা করে হত্যা করেছে এক পরকীয়া প্রেমিকা। সজিব তার প্রেমিকা শাহনাজ পারভিনের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ার পরে নজর দেয় তার (শাহনাজের) মেয়ের দিকে। এক পর্যায়ে শাহনাজের সাথে দৈহিক সম্পর্ক ভিডিও করে মেয়েকে এনে দিতে বাধ্য সবুজ। আর এর পরেই ক্ষিপ্ত হয়ে শাহনাজ সজিবকে হত্যা করে। সজিবকে হত্যার পর নিজেই পুলিশের হাতে ধরা দেয়।
জানা গেছে, পরকীয়ার টানে স্বামীর ঘর ছেড়ে পালিয়েছিল শাহনাজ পারভিন। কিন্তু হঠাৎ করেই প্রতারণার আশ্রয় নেয় পরকীয়ার নায়ক সজিব হাসান। অবৈধ মেলামেশার সময় মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে সে। পারভিনকে সেই ভিডিও দিয়ে জিম্মি করা হয়। তার কাছে বায়না ধরে এবার তাকে (পারভিন) নয়, মেয়েকে এনে দিতে হবে। একই সঙ্গে স্বামীর কাছ থেকে টাকা এনে দিতে হবে। না হলে লোকজনের মধ্যে ভিডিও ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে চলে ঝগড়া ও মারামারি। এক পর্যায়ে শাহনাজ পারভিন ঘুমন্ত অবস্থায় সজিবকে (৪০) কুপিয়ে হত্যা করে। একই সঙ্গে সজিবের শরীর থেকে দুই হাত ও দুই পা বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরে পারভিন নিজেই ধরা দেয় পুলিশের কাছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সায়েদাবাদ সংলগ্ন ওয়ারির টিকাটুলির ১৭/১ কে এম দাস লেনের ভবনের চারতলার বাসায় ঘটে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। এ ঘটনায় পুলিশ পারভিনকে গ্রেপ্তার ও পারভিনের স্বামী জসিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত সজিব হাসানের শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন দুই হাত, দুই পা, শরীরসহ পাঁচটি অংশ উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ-মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহƒত রক্তমাখা বঁটিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র।
দুপুরের পর এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শত শত উৎসুক মানুষ ভিড় জমায় সেখানে। স্থানীয় লোকজন জানায়, সজিব হাসান কে এম দাস লেনের ওই বাসায় বেশিরভাগ সময়ই একা থাকতো। তার পরিবার (স্ত্রী-সন্তান) ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুণ্ড উপজেলায় বাড়িতে থাকতো। এই সুযোগে সজিব একা বাসায় নারীদের নিয়ে আসতো।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ওয়ারি থানার এসআই সোহাগ ও এসআই সাইফুল ইসলাম জানান, শাহনাজ পারভিনের স্বামী জসিম কয়েকদিন আগে স্ত্রীকে খুঁজে পাচ্ছেন না বলে থানায় একটি ডায়েরি করেন। গতকাল দুপুরে তিনি থানায় গিয়ে জানান, তার স্ত্রী পারভিন ফোনে জানিয়েছে, সে বিপদে আছে। সায়েদাবাদের কাছে একটি বাড়িতে সজিব তাকে আটকে রেখেছে। এ কথা শুনে পুলিশ তাকে নিয়ে কে এম দাস লেনের ওই বাড়িতে যায়। চারতলার বাসার দরজা নক করার সঙ্গে সঙ্গে শাহনাজ পারভিন নিজেই দরজা খুলে দেয়। সে জানায় সজিবকে খুন করেছে। পুলিশ বাসার ভেতরে ঢুকে সজিবের খণ্ডিত লাশ দেখতে পায়। পুরো ঘর রক্তাক্ত অবস্থায় রয়েছে।
এসআই সোহাগ জানান, জিজ্ঞাসাবাদে শাহনাজ পারভিন জানিয়েছে সে একাই সজিবকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তবে তার সঙ্গে আরো কেউ ছিল কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি জানান, শাহনাজ পারভিন জানিয়েছে, ৪৯/২ আর কে মিশন রোডে তাদের বাসা। গত পাঁচ বছর ধরে সজিবের সঙ্গে তার পরকীয়া চলছিল। সজিব পেশায় হস্তশিল্পী ছিল। শাহনাজ পারভিন প্রায়ই কে এম দাস লেনে সজিবের বাসায় যেত। তারা অবৈধ মেলামেশা করত। সম্প্রতি সজিব শাহনাজ পারভিনকে স্বামী-সন্তান ছেড়ে তার সঙ্গে ঘর করতে প্ররোচনা দিতে থাকে। এক পর্যায়ে শাহনাজ পারভিন স্বামী-সন্তান ছেড়ে সজিবের বাসায় গিয়ে ওঠে। এরপর স্বামী-সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে। এর পরই স্বামী জসিম থানায় স্ত্রী নিখোঁজের ডায়েরি করেন। কিন্তু সজিব শাহনাজ পারভিনের সঙ্গে প্রতারণা করে। তাদের অনৈতিক সম্পর্ক মোবাইলে ভিডিও করত। ওই ভিডিওকে জিম্মি করে সে তার (শাহনাজ) মেয়েকে বাসায় নিয়ে আসতে বলে। আবার মুক্তির জন্য স্বামীর কাছ থেকে টাকা এনে দিতে বায়না ধরে। শাহনাজ পুলিশকে জানায়, সে অতিষ্ঠ হয়ে সজিবকে খুন করেছে। বুধবার রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া ও মারামারি হয়। পরে তারা ঘুমিয়ে পড়ে। এরই এক ফাঁকে শাহনাজ রান্নাঘর থেকে বঁটি এনে ঘুমে থাকা সজিবকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। সজিব নিস্তেজ হয়ে পড়লে তার হাত ও পা বিচ্ছিন্ন করা হয় বলে সে পুলিশকে জানায়।
পুলিশ জানায়, শাহনাজ পারভিনের বয়স চল্লিশের উপরে। সে একাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা তা নিহতের লাশের পোস্টমর্টেম রিপোর্টে বোঝা যাবে। এসআই সোহাগ জানান, নিহতের স্বজনদের সংবাদ দেয়া হয়েছে। তারা এলে এই ঘটনা সম্পর্কে আরো কিছু জানা যেতে পারে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন বড় বোন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন তিনি।
ঢাকা অফিস
সম্পাদক : মোঃ ইয়াসিন টিপু
নাহার প্লাজা , ঢাকা-১২১৬
+৮৮ ০১৮১৩১৯৮৮৮২ , +৮৮ ০১৬১৩১৯৮৮৮২
shwapnonews@gmail.com
পরিচালনা সম্পাদক : মিহিরমিজি