রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার বান্ধবী ফারজানা জামান নেহা সেদিন রেস্টুরেন্টে গিয়ে তিন প্যাক মদ পান করেছিলেন বলে আদালত জানিয়েছেন।
শুক্রবার আদালতে হাজির করা হলে তিনি এ কথা বলেন। নেহা বলেন, আরাফাত আমার বন্ধু। গত ২৮ জানুয়ারি বন্ধু আরাফাতের নিমন্ত্রণে উত্তরার সুইট রেস্টুরেন্টে যাই। সেখানে গিয়ে আরো কয়েকজনকে দেখতে পাই। আমি আরাফাত ছাড়া অন্য কাউকে চিনতে পারিনি। সেখানে আমি মদ পান করি।
তিনি বলেন, ৩ পেগ খাওয়ার পর আমার মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়। আমি তখন সেখান থেকে বাসায় চলে যাই। বাসায় আসার পরও আমার কয়েক দফা বমি হয়। এরপর আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নেই।

এদিন আসামি নেহাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই মো. সাজেদুল হক তার সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালত তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার এ মামলায় অজ্ঞাত আসামি শাফায়াত জামিল জামিন চেয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর আদালত জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এছাড়া গত ৩১ জানুয়ারি এ মামলায় ভুক্তভোগীর দুই বন্ধু মর্তুজা রায়হান চৌধুরী ও নুহাত আলম তাফসীর পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার এজাহারে আরো বলা হয়, মদ্যপানের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে নুহাতের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও রুমে ছিল। ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খানকে ফোন দেন। সেই বন্ধু পরদিন এসে ওই তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আসামি আরাফাতের বাসায় যান। আরাফাতের বাসায় স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী ও রায়হান একসঙ্গে উবারে করে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান।

দুইদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর গত ৩০ জানুয়ারি তরুণী মারা যান। ওইদিন রাজধানীর মোহাম্মদ পুর থানায় নিহত তরুণীর বাবা বাদী হয়ে চার জনসহ অজ্ঞাত আরো একজনের নামে মামলা করেন। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।